Detail Biography:
চার্লস ডিকেন্স
‘রিপোর্টারের পদ পাওয়ায় ডিকেন্সের সঙ্গে বহু মানুষের যোগাযোগ ঘটে। তাঁর অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ হয়। আর এই অভিজ্ঞতার জোরেই তিনি মহান সাহিত্যিক।’
চার্লস জন হফম্যান ডিকেন্স। সর্বকালের শ্রেষ্ট সাহিত্যিকদের একজন।
১৮১২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারী ইংল্যন্ডের পোর্টসমাউথে। বাবা জন ডিসেন্স ব্রিটিশ নৌ দপ্তরের কর্মবিমুখ ফুর্তিবাজ কেরানি। ফুর্তিতে টাকা ওড়াতেন। ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। মামলাও হয়। জেলও খাটেন চার্লস ডিকেন্সের বাবা।
চার্লসরা আজ ভাইবোন। চার্লস তাঁর বাবা-মার দ্বিতীয় সন্তান। মা এলিজাবেথ দারুণ সহনশীলা রমণী। সংসার সামলাতে তাঁর বিড়ম্বনার অন্ত ছিল না।
চার্লস মেধাবী ছাত্র ছিলেন। কিন্তু বাবা জেলে ঢোকায় তাঁর লেখাপড়ায় ছেদ পড়ে। একটি কালি তৈরির কারখানাতে শ্রমিক হিসেবে ঢুকলেন পেটের ভাত জোগাড় করতে। মজুরি প্রতিদিন এক শিলিং
স্কুলে না গেলেও চার্লস সুযোগ পেলেই বই পড়তেন।
বাবা যখন জেলখানা থেকে বেরিয়ে এলেন, চার্লসের বয়স তখন বারো বছর। ইতিমধ্যে বাবার স্বভাব খানিক বদলেছে। তিনি নানান কাজে উপার্জন শুরু করলেন। চার্লসকেও আবার স্কুলে ভর্তি করে দিলেন। স্কুলে গান-বাজনা ও নাটকে চার্লসের দক্ষতা প্রকাশ পায়।
এর তিন বছর বাদে চার্লসকে দেখা গেল এক সলিসিটার ফার্মে চাকুরি করছেন অফিস-বয় হিসেবে। এরপর হলেন একজন সংসদ রিপোর্টার।
রিপোর্টারের পদ পাওয়ায় ডিকেন্সের সঙ্গে বহু মানুষের যোগাযোগ ঘটে। তাঁর অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ হয়। আর এই অভিজ্ঞতার জোরেই তিনি মহান সাহিত্যিক।
১৮৩৩ সালে থেকে ডিকেন্স ওল্ড মান্থলি ম্যাগাজিনে নিয়মিত ছোট ছোট লেখা লিখতে শুরু করেন। লিখতেন ‘বজ’ ছদ্মনামে।
১৮৩৪ সালে তাঁর ওই স্কেচধর্মী লেখাগুলিকে নিয়ে একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়-ঝশবঃপযবং নু ইড়ু.
এরপরই নামী প্রকাশন সঙ্গে ‘চ্যাপহান অ্যান্ড হল’ চুক্তি করে ডিকেন্সের সঙ্গে। চুক্তি অনুসারে প্রতিমাসে ডিকেন্স একটি করে লেখা জমা দিলেন, যেগুলিকে চিত্রিত করলেন প্রখ্যাত শিল্পী রবার্ট সিমূর।
১৮৩৬ সালে চার্লস ডিকেন্স বিয়ে করেন।
১৮৩৭ সালে প্রকাশিত হল চার্লস ডিকেন্সের বিখ্যাত ও আকর্ষক রচনা চড়ংঃযঁসড়ঁং চধঢ়বৎং ড়ভ ঃযব চরপশ রিপশ ঈষঁন। এইটি এক সচিত্র উপন্যাস- যা তাঁকে বিশেষ জনপ্রিয়তা এনে দেয়।
১৮৩৮ সালে প্রকাশিত হয় ‘অলিভার টুইস্ট।’ তখন তিনি ইংরেজি সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ লেখক।
১৮৩৯ সালে প্রকাশিত হয় ‘ডেভিড কপারফিল্ড।’
১৮৫৩ সালে পাঠকরা পেলেন তাঁর ‘ব্রীক হাউস’ তারপর প্রকাশ পেল ‘এ টেল অফ টু সিটিজ।’
১৮৬১ সালে প্রকাশ পায় ‘গ্রেট এ·ক্টেশনস।’ তখন কেবল ব্রিটেন নয়, সারা বিশ্বে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌছে গিয়েছেন চার্লস ডিকেন্স।
এরপর তিনি দুনিয়ার যেখানেই গিয়েছেন, পেয়েছেন স্বতঃস্ফুর্ত অভ্যর্থনা। বহুস্থানে বহুজনের অনুরোধে স্বরচিত গ্রন্থাদি থেকে নির্দিষ্ট অংশগুলি পড়ে শোনাতেন তিনি। এর ফলে তিনি পরিশ্রান্ত হয়ে পড়তেন।
১৮৬৯ সালে তিনি খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং মাত্র এক বছরের মধ্যে ১৮৭০ খৃষ্টাব্দে ৯ জানুয়ারি ব্রিটেনের, কেন্টের হাইয়ামে মৃত্যুবরণ করেন।
তথ্যসুত্রঃ সেরা জীবনী সমগ্র।