Nationality: Chinese
Date of Birth: 551
Date of Death: 479
Father Name: Heye
Mother Name: Han Zheng
Country: China
Detail Biography:
'মানুষকে শিক্ষিত হতে হবে । শিক্ষার ক্ষেত্রে যেন শ্রেণী বৈষম্য না থাকে’
-কনফুসিয়াস
প্রত্যেক ধর্ম প্রবর্তকই এক একজন বড় দার্শনিক-যাঁদের দর্শনের জ্যোতিতে বিশেষ ভাবে আলোচিত হয়েছে মানব সমাজ । এই সমাজে একটা বিষয় লক্ষণীয় মূল বিষয়ে একধর্মের সঙ্গে অপর ধর্মের কোনও মতদ্বৈত নেই। ”তবুও যে ধর্ম নিয়ে মানুষে-মানুষে বিরোধ, মতানৈক্য ও হানাহানি, তার মূল কারণ প্রকৃত শিক্ষা ও আধ্যাত্মিক বোধের অভাব । এত যুগ পার হবার পরও মানুষ যে এখনও কেন সার্বিক ভাবে শিক্ষিত হল না, তার কারণ নির্ণয় করা বহুলাংশে দুষ্কর।
অথচ যীশুর জন্মের ৫৫১ বৎসর পূর্বে আবিভূর্ত হয়ে একজন মহাপ্রাজ্ঞ ধর্মপ্রচারক মানুষকে শিখিয়ে ছিলেন কীভাবে শূণ্যগর্ভ ক্রোধ ও বিদ্বেষকে পরাভূত করতে হয়।
`তিনি মহাপ্রাজ্ঞ কনপুসিয়াস’। মাথায় শিরস্ত্রান, দাড়িতে তৈরি গালপাট্টা, পরনে আজানু লম্বিত জোদ্ধা, আশ্চর্য দ্যুতিময় এক জোড়া চোখ, মধুর কন্ঠস্বর, তিনি সকলের মধ্যে আত্মপ্রত্যয়ের বীজ ফুল-ফলায়িত করতে এই ধরাধামে এসেছিলেন।
‘কনফুসিয়াসের’ জন্ম পূর্বচীনের লু প্রদেশে।তাঁর জীবন সম্পর্কে বিভিন্ন ছোট ছোট কাহিনী তথা কিংবদন্তী প্রচলিত আছে, যেগুলিকে চর্চা করে তাঁর জীবন আলেখ্য রচনা করতে হয়েছে। চীনে তাঁর পরিচিতি কুঙজু নামে।কুঙজু শব্দের অর্থ দার্শনিক কুং।
কনফুসিয়াসের বাবার নাম `হেই’ মার নাম ‘হান ঝেঙ’ হেই খুব বলবান ব্যক্তি ছিলেন। কিন্তু অল্প বয়সে মারাযান।কনফুসিয়াসের তখন বয়স ছিলো মাত্র তিন বছর।পরিতাপের বিষয় মাত্র আট বছর বয়সে তাঁকে কর্মের সন্ধানে পথে নামতে হয় । কর্ম ও শিক্ষার পাশাপাশি ষোল বছর বয়সে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।এরমধ্যে তিনি দার্শনিকতার প্রজ্জলন দেখতে পেলেন এসে গেল দার্শনিক সুলভ নিস্পৃহতা ।তিনি অত্যন্ত সৎ মানুষ রূপে সমাজে পরিচিতি পেলেন । সৎ এবং উচ্চ শিক্ষিত । নিজের চেষ্টায় কনফুসিয়াস জ্যোতিবিদ্যা, সাহিত্য ও গণিতে অসাধারণ ব্যুৎপত্তি লাভ করনে । তিনি বলতেন, প্রত্যেকেরই পড়াশুনা করা উচিত । যাঁর শিক্ষা ও জ্ঞান নেই, তিনিতো অন্ধকারে থাকেন । কনফুসিয়াসের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ল।তাঁকে তখন লু প্রদেশের শাসনকর্তার পদে নিয়োগ করা হল।কিন্তু প্রতিবেশি রাষ্ট্রের যড়যন্ত্রে তিনি নানাভাবে হেনস্তা হতে থাকেন নিজের আর্দশ অনুসারে কাজ পরিচালনা করতে গিয়ে । তিনি আর্দশে অটল থেকে বাধ্য হয়ে লু প্রদেশের শাসনকর্তা পদ থেকে পদত্যাগ করনে।
কনফুসিয়াস কোনও দিন দাবি করেননি যে তিনি ঈশ্বর প্রেরিত দূত বা তাঁর রয়েছে অসাধারণ কোনও বিধিদত্ত ক্ষমতা । কিন্তু তিনিই সেই মহান ব্যক্তিত্ব, যিনি মানুষকে বিন্দুর মধ্যে সিন্ধুর উপস্থিতি টের পাইয়ে দেন ।এক সময় তাঁর ক্রমবর্ধিত শিক্ষা ও আদর্শ গন্ডী পার হতে হতে সমগ্রচীনে পরিব্যাপ্ত হয়েছিল ।আজও মহাচীনের প্রায় ২৬ শতাংশ মানুষ কনফুসিয়াসের আর্দশে বা প্রবর্তিত মতবাদে বিশ্বাসী।কনফুসিয়াসের শিক্ষার মধ্যেই তাঁদের জিজ্ঞাসু হৃদয় সকল সমস্যাস মাধানের মতাদর্শ পেয়ে থাকে।
কনফুসিয়াস সাধারণ মানুষদের উপদেশ দিতেন কিভাবে জীবন নির্বাহ করা উচিত । সততা, কর্মনিষ্ঠা, স্নেহ ও মধুর ব্যবহার-এইগুলি মানুষকে মেনে চলতেই হবে । যার চরিত্র নেই, তারতো কিছুই নেই।
কনফুসিয়াসের শিক্ষাই তাঁর ধর্মমতে রূপান্তরিত হয় । এটাই কালক্রমে কনফুসিয় ধর্মনামে পরিচিতি লাভ করে । কনফুসিয়াস কয়েকটি গ্রন্থও রচনা করেন । অধিকাংশ রচনাই অসামাপ্ত থেকে যায় । কেবল ‘চুনবিউ (বসন্ত ও শরৎ) গ্রন্থটি সমাপ্ত করে।
যীশু খ্রিস্টের জন্মের ৪৭৯ বৎসর পূর্বে ৭২ বছর বয়সে কনফুসিয়াস দেহ রক্ষা করনে।
তথ্যসূত্র :সেরা জীবনী সমগ্র থেকে।