Detail Biography:
ভারতবর্ষের ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষাবিদ হিসেবে আমরা স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়কেই চিহিৃত করে থাকি। তাঁর দৃঢ়চিত্তের জন্য আমরা তাঁকে ‘বাংলার বাঘ’ও বলে থাকি।
১৮৬৪ খৃষ্টাব্দে ২৯ জুন ব্রিটিশ-ভারত পশ্চিম বঙ্গের কলকাতায় আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের জন্ম। বাল্যকাল থেকেই তিনি ছিলেন দুর্দান্ত মেধাবী। অংকে অসাধারণ মেধার জন্য তাঁকে উপাধি দেওয়া হয় ‘কেমব্রিজ ম্যাসেঞ্জার অফ ম্যাথামেটিকস’। তিনি বি.এ ও এম.এ –-এই দুই পরীক্ষাতেই প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হন কলকাতা বিশ^বিদ্যালয় থেকে। তিনি একজন পদার্থ বিজ্ঞানীও।
ব্রিটিশ সরকার আশুতোষকে শিক্ষাবিভাগের উচ্চপদস্থ অফিসাররূপে নিয়োগ করতে চাইলে আশুতোষ সেই অনুরোধ প্রত্যাখান করেন। সরকারি চাকরি করবার কোনও বাসনা তাঁর ছিল না।
১৯৩৪ খৃষ্টাব্দে আশুতোষ মুখোপাধ্যায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারকের পদ গ্রহণ করেন।
তখন থেকেই বাংলা তথা ভারতে শিক্ষাবিস্তারের জন্য এক ধরনের আন্দোলন শুরু করেন। তাঁর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদতে অনেক স্কুল ও কলেজ গড়ে উঠে।
১৯১৮ খৃষ্টাব্দে স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় কলকাতা বিশ^বিদ্যালয়ের উপচার্যের পদ গ্রহণ করলে বাংলাদেশে শিক্ষাপ্রসারে এক নতুন যুগ প্রবেশ করে।
‘বাংলার ঘরে ঘরে আমি গ্রাজুয়েট তৈরি করব’ -এটাই ছিল স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের পণ। শিক্ষাব্যবস্থায় বিপ্লব আনেন। তাঁর নেতৃত্বে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ভারতের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছিল।
সরকার তাঁকে পঞ্চম টার্মের জন্য উপাচার্য করতে চেয়েছিল। কিন্তু সরকারের কিছু বিশেষ শর্ত থাকায় আশুতোষ পদ গ্রহণে অস্বীকার করেন।
তাঁর আত্মসম্মানবোধ ছিল সুতীব্র। জীবনে কোনও দিন কাউকে তোষামোদ করেননি। আবার উপযুক্ত ব্যক্তিত্বের সন্ধান পেলে তাঁকে সম্মান জানাতে কসুর করেননি। তাঁর এই চারিত্রিক গুণের জন্যই ভারতবাসীর কাছে তিনি ‘বাংলার বাঘ’ এবং ব্রিটিশের কাছে ‘স্যার আশুতোষ’।
পরে তিনি ভারতীয় বিজ্ঞানচর্চা সমিতির সভাপতি হয়েছিলেন। তাঁর রচিত প্রবন্ধ সঙ্কলন ‘জাতীয় সাহিত্য’ একটি উৎকৃষ্ট গ্রন্থ। বাংলা ও ইংরেজী ছাড়া তিনি ফরাসী, রুশ ও পালি ভাষাও জানতেন। তিনি বিধবা বিবাহের একজন জোরালো সমর্থক ছিলেন। নিজের বিধবা কন্যার বিয়েও দিয়েছিলেন।
স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় ১৮৯৪ খৃষ্টাব্দে আইন শাস্ত্রে পিএইডি ডিগ্রি রপ্ত করেন। ১৯০৪ খৃষ্টাব্দে তিনি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি পদে অভিষিক্ত হন। ১৯০৬ খৃষ্টাব্দে তিনি কলকাতা বিশ^বিদ্যালয় উপচার্য পদে অভিষিক্ত হন।
১৯১১ খৃষ্টাব্দে ‘নাইট’ উপাধিতে ভূষিত হন।
১৯২৪ খৃষ্টাব্দের ২৫ মে বিহারের পাটনাতে এই অনন্য শিক্ষাবিদ পরলোকগমন করেন।
তাঁর বিস্তারিত জানতে বায়োগ্রাফি এভিনিউ’র গ্রন্থগারে আপনাকে স্বাগতম।
তথ্য সুত্রঃ সেরা জীবনী সমগ্র।